বিশেষ প্রতিবেদক:
টেকনাফের বাহারছড়ায় পুলিশের গুলিতে নিহত অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার চার্জশীট গ্রহণ করেছে আদালত। একই সঙ্গে এই মামলার পলাতক আসামী টেকনাফ থানার সাবেক এএসআই সাগর দেবের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করা হয়।
সোমবার (২১ ডিসেম্বর) দুপুরে কক্সবাজারের জেষ্ঠ বিচারিক হাকিম তামান্না ফারাহ এ আদেশ দেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, গেল ১৩ ডিসেম্বর র্যাবের তদন্ত কর্মকর্তা দেয়া চার্জশীট গ্রহণ করেছে আদালত। একই সঙ্গে এ মামলার পলাতক আসামী এএসআই সাগর দেবের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করেছে।
দীর্ঘ চার মাস আট দিন তদন্ত শেষে টেকনাফ থানার আলোচিত ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ ১৫ জনকে আসামী করে চার্জশীট দেয় র্যাবের তদন্ত কর্মকর্তা মো. খায়রুল ইসলাম। এএসআই সাগর দেব পলাতক বলে উল্লেখ্য করা হয়।
গত ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে গাড়ী তল্লাশীকে কেন্দ্র করে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাখেদ খান।
এ ঘটনায় গত ৫ আগস্ট নিহত সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস বাদী হয়েছে বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের সাবেক ইনচার্জ পরিদর্শক লিয়াকত আলীকে প্রধান আসামী করে টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ নয় জন পুলিশ সদস্যকে আসামী করা হয়। আদালত মামলাটির তদন্ত করার আদেশ দেন র্যাবকে।
এরপর গত ৬ আগস্ট প্রধান আসামী লিয়াকত আলী ও টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ ৭ পুলিশ সদস্য আদালতে আত্মসমর্পণ করেন।
পরবর্তীতে সিনহা হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার সংশ্লিষ্টতা পাওয়ার অভিযোগে পুলিশের দায়ের মামলার ৩ জন স্বাক্ষী এবং শামলাপুর চেকপোস্টের দায়িত্বরত আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়ানের ( এপিবিএন ) ৩ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। এছাড়া একই অভিযোগে পরে গ্রেপ্তার করা হয় টেকনাফ থানা পুলিশের সাবেক সদস্য কনস্টেবল রুবেল শর্মাকেও।
মামলায় গ্রেপ্তার ১৪ আসামীকে র্যাবের তদন্তকারি কর্মকর্তা বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে। এদের মধ্যে টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও কনস্টেবল রুবেল শর্মা ছাড়া ১২ জন আসামী আদালতে ঘটনার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
এদিকে অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা হত্যার ঘটনায় তার বোনের দায়ের মামলাটি বে-আইনি ও অবৈধ ঘোষণা চেয়ে প্রধান আসামী লিয়াকত আলীর আইনজীবীর দায়ের মামলার পূর্ণাঙ্গ শুনানীর নির্ধারিত দিন আজ ( ১৩ ডিসেম্বর )।
গত ৪ অক্টোবর কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে প্রধান আসামী লিয়াকতের আইনজীবী মাসুদ সালাহ উদ্দিন এ মামলাটি দায়ের করেন। ওই দিন আদালত মামলাটির পূর্ণাঙ্গ শুনানীর জন্য ২০ অক্টোবর দিন ধার্য্য করেন।
কিন্তু শুনানীর ওই নির্ধারিত দিনে সিনহা হত্যার মামলার বাদী শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস অসুস্থাতার কারণে আদালতে উপস্থিত থাকতে না পারায় পরবর্তী শুনানীর দিন ধার্য্য করেন ১০ নভেম্বর।
অন্যদিকে মামলাটি শুনানীর ওই নির্ধারিত দিনে ( ১০ নভেম্বর ) সিনহা হত্যার মামলাটি বে-আইনি ও অবৈধ ঘোষণা চেয়ে আবেদনকারি পক্ষের আইনজীবী মাসুদ সালাহ উদ্দিন অসুস্থ হয়ে পড়েন। এতে মামলাটির পূর্ণাঙ্গ শুনানীর দিন আবারো পিছিয়ে যায়।
ওই দিন ( ১০ নভেম্বর ) আদালত মামলাটির পূর্ণাঙ্গ শুনানীর জন্য ১৩ ডিসেম্বর দিন ধার্য্য করেন।
Leave a Reply